ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে ব্যাংক ঋণের মামলায় গ্রেপ্তার ১২ কৃষককে জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. শামসুজ্জামান জামিনের এই আদেশ দেন।
জামিনে মুক্ত কৃষকেরা হলেন—উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী গ্রামের মৃত সোবাহান মণ্ডলের ছেলে আবদুল গণি মণ্ডল (৫০), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে সামাদ প্রামাণিক (৪৩), শুকুর প্রামাণিকের ছেলে আলম প্রামাণিক (৫০), মনিরুলের ছেলে মাহাতাব মণ্ডল (৪৫), কামাল প্রামাণিকের ছেলে শামীম হোসেন (৪৫), মৃত সামির উদ্দিনের ছেলে নূর বক্স (৪৫), মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৫০), রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (৪৬), লালু খাঁর ছেলে মোহাম্মদ রজব আলী (৪০), মৃত কোরবান আলীর ছেলে কিতাব আলী (৫০), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ মজনু (৪০) ও হারেজ মিয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৪৩)।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক এই কৃষকদের গ্রেপ্তার করে ঈশ্বরদী থানার পুলিশ। বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক পাবনা শাখা থেকে এই কৃষকদের বিরুদ্ধে সবজি ঋণের টাকা পরিশোধ না করায় মামলা করা হয়। এই মামলায় ঈশ্বরদীর ৩৭ জন কৃষককে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার পাবনা জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
জামিনে মুক্ত হওয়ার পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, বঙ্গবন্ধু জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ ওরফে কুল ময়েজ। তিনি বলেন, ‘এসব কৃষকের অনেকে শীতের রাতে গাজরের খেতে কাজ করছিলেন, অনেকে কাজ শেষে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এমন অবস্থা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে নেয় পুলিশ।’
গভীর রাতে কৃষকদের গ্রেপ্তার করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘যে কৃষক ভোরে ঘুম থেকে উঠে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন, সেই কৃষককে সামান্য টাকার কারণে মামলা দেওয়া হয়। এটা মোটেও কাম্য নয়। আমি অবিলম্বে ঈশ্বরদীর কৃষকদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’
এ মামলায় কৃষকদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন ময়নুল ইসলাম মোহন, সাইদুর রহমান সুমন ও সাজ্জাদ ইসলাম লিটন।