নাটোরে খাতা ও প্রশ্নপত্র কেড়ে নিয়ে ৪২২ শিক্ষার্থীকে বের করে দিলেন প্রধান শিক্ষক!

নাটোরে খাতা ও প্রশ্নপত্র কেড়ে নিয়ে ৪২২ শিক্ষার্থীকে বের করে দিলেন প্রধান শিক্ষক!

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অসৌজন্যমূলক, অপমান ও মানহানিকর আচরণে বিস্মিত ও হতাশ হয়েছেন ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর প্রধান শিক্ষক কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর ‘বেতন বকেয়া’ থাকার কারণে রাগান্বিত হয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির সকল (৪২২জন) শিক্ষার্থীর খাতা ও প্রশ্নপত্র কেড়ে নিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেন। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কস্ট, অভিমান, ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এ ঘটনাকে অপমানকর, মানহানিকর বা লজ্জাজনক বলে দাবি করে এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে।

আরও পড়ুনঃ  ভাই হত্যা, বোন ও তার দুই ছেলে গ্রেপ্তার

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে। এ সময় শিক্ষকেরা উত্তরপত্র (খাতা) প্রদান করেন ও সময় ১০টার ঘন্টা বাজলে প্রশ্নপত্রও প্রদান করেন। আকস্মিক প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান পরীক্ষার হলে এসে কে কে বেতন পরিশোধ করে নাই জানতে চান। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বেতন বকেয়া আছে বলে স্বীকার করেন। এতে রাগান্বিত হয়ে প্রধান শিক্ষক খাতা ও প্রশ্নপত্র কেড়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের করে দেন।

অভিভাবক মোসলেমউদ্দিন মন্ডল, রঞ্জিত কুমার কুন্ডু, মুকুল হোসেন সহ অনেকেই জানান, বেতন বকেয়া যার, তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারতো। এক্ষেত্রে যাদের পরিশোধ রয়েছে তাদের কাছ থেকে খাতা-প্রশ্নপত্র কেড়ে ক্লাশ রুম থেকে বের করে দেওয়া ঠিক হয়নি। এছাড়া বেতন আদায় করার জন্য এ আচরণ রীতিমতো স্বেচ্ছাচারিতা ও আপত্তিকর।

আরও পড়ুনঃ  ৮ বিভাগে ঝড়-বৃষ্টির আভাস, হতে পারে শিলাবৃষ্টিও

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এর নাটোর জেলা আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা জানান, যে সকল দরিদ্র শিক্ষার্থী বেতন দিতে পারে নাই এবং যাদের পরিশোধ রয়েছে এমন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খাতা ও প্রশ্নপত্র কেড়ে নিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণই শিশু সুরক্ষা নীতিমালা ও আচরণবিধি পরিপন্থী হয়েছে। কোমলমতি এ সকল শিক্ষার্থীদের মনে আঘাত দেওয়া মোটেও ঠিক হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  অন্য মুসলিম দেশ যা পারেনি, বাংলাদেশ তা করে দেখিয়েছে’

ওই বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক লাভলী বেগম জানান, খাতা ও প্রশ্নপত্র বিতরণের আগে যদি প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা না নিতে নির্দেশ দিতেন তাহলে হয়তো ঠিক হতো। এতে করে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে গেছে এবং আমাদেরকে সারাদিন পরিশ্রম করে আবার প্রশ্ন তৈরী করতে হচ্ছে। এছাড়া এতে বেশ পরিমাণ অর্থও অপচয় হলো।

প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি যা করেছি, ঠিকই করেছি। আপনি পত্রিকার পাতায় বড় করে আমার বিরুদ্ধে নিউজ ছাপিয়ে দিন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *