ফরিদপুরে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ৩১ বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

ফরিদপুরে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ৩১ বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই নেতার বাড়িসহ অন্তত ৩১টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৯ জন। এর মধ্যে ৩ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফুসরা গ্রামটি কানাইপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। এ গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন আক্কাস মাতুব্বর। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরপক্ষের নেতৃত্ব দেন হাশেম খান। তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।

আরও পড়ুনঃ  ঢাকায় এলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার বিকেলে এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দুই পক্ষের দুই সমর্থকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর ইকবাল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি দুই পক্ষের কাছ থেকে এ নিয়ে কোনো সংঘর্ষে জড়াবেন না বলে প্রতিশ্রুতি নেন।

পুলিশ জানায়, এ প্রতিশ্রুতি আক্কাস মাতুব্বর মেনে নিলেও হাশেম খান গোপনে গোপনে সংঘাতের প্রস্তুতি নেন। এরপর আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাশেম খানের সমর্থকরা আক্কাস মাতুব্বরের বাড়িসহ তার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর করে গরু-ছাগল লুটপাট করেন। পরে আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকরা সংগঠিত হয়ে হাশেম খানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।

আরও পড়ুনঃ  আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) আনুগত্যই একমাত্র মুক্তির পথ- ড. মাওলানা কেরামত আলী

এ সময় অন্তত ৩১টি বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অনেক বাড়ি থেকে গরু-ছাগল লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ৯ জন আহত হন। এর মধ্যে ৩ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র‍্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, আক্কাস মাতুব্বর এবং হাশেম খানের মধ্যে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিল।

আরও পড়ুনঃ  আদালতের এজলাসে পুলিশকে মারধর, বিএনপির ৬ নেতাকর্মী আটক

আক্কাস মাতুব্বর বলেন, রোববার রাতে পুলিশের মধ্যস্থতায় আমরা সংঘর্ষে লিপ্ত হব না বলে কথা দিয়েছিলাম। আমি তা মেনে নিলেও হাশেম খান তা মানেননি। তার সমর্থকরা আজ সকালে আমার বাড়িসহ আমার সমর্থকদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও গরু-ছাগল লুটপাট করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে হাশেম খান বলেন, আক্কাসের সমর্থকরা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র‍্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *