অনলাইন ডেস্ক : বরগুনার আমতলী পৌরসভার বটতলা ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনিক পরিবহন কাউন্টার দখলকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবদল ও পৌর বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পক্ষের ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ১১ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে আমতলীর বাঁধঘাট চৌরাস্তায় এই সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর আমতলী পৌরসভার বটতলা ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনিক কাউন্টার দখল নিয়ে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কবির ফকির ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর সামসুল হক চৌকিদারের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। তাঁদের দুজনেরই দাবি, ইউনিক পরিবহন কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এ নিয়ে কেউ কোনো লিখিত কাগজ দেখাতে পারেননি। দুজনে একই দাবি করলেও গত চার মাস ধরে কবির ফকির কাউন্টার পরিচালনা করে আসছিলেন।
এদিকে গত ২৭ জানুয়ারি ইউনিক পরিবহন কর্তৃপক্ষ সামসুল হক চৌকিদারকে লিখিত কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। এর পর থেকে সামসুল হক চৌকিদার কাউন্টার বুঝে নিতে চাইলে কবির ফকির তা দেননি এমন অভিযোগ সামসুল হক চৌকিদারের।
এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে আমতলী থানায় বৈঠক হলেও পুলিশ কোনো সমাধান করতে পারেনি। পরে আজ শনিবার সকালে সামসুল হক চৌকিদারের লোকজন কাউন্টার দখল করতে যান। এ সময় কবির ফকিরের চাচাতো ভাই উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত আহ্বায়ক জালাল ফকিরের দুই ছেলে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরের নেতৃত্বে তাঁদের লোকজন এসে বাধা দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এ সময় আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন দোকানিরা।
আমতলী উপজেলা ছাত্রদল আহ্বায়ক সোয়েব ইসলাম হেলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ভাই বেল্লাল চৌকিদার কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরসহ তার সহযোগীরা হামলা করে আট লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। একই সঙ্গে আমার ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে।’
জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সামসুল হক চৌকিদার বলেন, ‘ইউনিক পরিবহন কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারি আমাকে লিখিত কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু কবির ফকির কাউন্টার জোরপূর্বক দখলে রেখেছেন। আমি এ বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেছি। পুলিশ চেষ্টা করেও কবির ফকিরতে মানাতে পারেনি। শনিবার আমি কাউন্টারে গেলে কবির ফকিরের লোকজন আমার লোকজনের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। এতে আমিসহ ১০ জন আহত হয়েছি।’
অপর দিকে আমতলী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কবির ফকির বলেন, ‘আমার কাউন্টার সামসুল হক চৌকিদার ও তার লোকজন দখলে করতে আসে। এতে আমার লোকজন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সামসুল হক চৌকিদার ও তার লোকজন আমার দুই ভাইয়ের ছেলেসহ সাতজনকে কুপিয়ে জখম করেছে।’
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. রাসেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, আহত সাতজনকে চিকিৎসা দিয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আমতলী থানার ওসি মো আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।