সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট জেলার বিয়ানীবাজারের বহুল বিতর্কিত সহকারি কমিশনার (ভূমি-এসিল্যান্ড) কাজী শারমিন নেওয়াজকে অবশেষে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক বদলী) করা হয়েছে।বুধবার রাতে প্রশাসনিক এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানায়।এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তিনি নিজ কার্যালয়ে যাননি।তার বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষের বহু অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়,সহকারি কমিশনার (ভূমি-এসিল্যান্ড) হিসেবে যোগদানের পর কাজী শারমিন নেওয়াজ নানা অনিয়ম,স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সেবা গ্রহীতার সাথে অসদাচরণ ও হয়রানির অভিযোগসহ বিস্তর অভিযোগ ভূক্তভোগী মানুষের মুখে মুখে।তিনি পৌরশহরের ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করা ব্যক্তিদের কাছ থেকেও দৈনিক হারে টাকা আদায় করতেন।
এছাড়াও জমির আকার পরিবর্তন করে খাজনার রসিদ কেটে দেয়া,সরকারি জমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে উৎকোচ আদায়,গোপনে বিরোধপূর্ণ জমির নামজারি করা,যেখানে সরকার নির্ধারিত করা ১,১৭০/= টাকা খাজনা ফি সেখানে ১১,০৭০/= টাকা থেকে ১,১০,০৭০/= টাকা খাজনা আদায় করতেন বিতর্কিত ভূমি কমিশনার কাজী শারমিন নেওয়াজ। অবৈধ মাটিকাটা বন্ধে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়াসহ নানা বিষয়ে সমালোচিত তিনি।অফিসের চেইনম্যান আব্দুল ওদুদের মাধ্যমে ভূমি অফিসে গড়ে তুলেছেন ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট।তথ্য অনুযায়ী, চেইনম্যানের ওদুদের বিরুদ্ধেও নেয়া হচ্ছে বিভাগীয় ব্যবস্থা।
ভূমি অফিসে হয়রানির শিকার সিলেটের এক সিনিয়র সাংবাদিকের কাছ থেকে নিয়েছিলেন ৩০০০০/= টাকা,খাসজমির মাটি বহন করায় ভূমি খেকো কামরান নামের ব্যক্তির গাড়ির চাবি ছেড়ে দিবেন বলে,কিন্তু ঔই সিনিয়র সাংবাদিক অভিযোগ করেন যে ভূমি কমিশনার টাকা নেওয়ার পরও কামরান নামের ভূমি খেকোর কাছ থেকে ভূয়া রিসিট ধরিয়ে আরো নিয়েছেন ১,০০০০০/= টাকা,তাছাড়া আরেক ভূমিদস্য শিপন নামের ব্যক্তির কাছ থেকে ও নিয়েছেন ১,১৫০০০/= টাকা শোনা যায় ভূমি কমিশনার কাজী শারমিন নেওয়াজ ভূমিখেকো শিপনকে না’কি বলছেন তোমার জরিমানা ২,১৫,০০০/=টাকা দিতে হবে,অন্যতায় রিসিট না নিলে ১,১৫,০০০/= টাকা পরিশোধ করতে হবে,পরিশেষে শোনাযায় শিপন লোকজনের কাছে বলতে তাকে আমি এসিল্যান্ড ম্যাডাম কে ১,১৫,০০০/= দিয়ে আমার গাড়ির চাবি এনেছি এবং ম্যাডামকে বায়েস্ট করেই আমি মাটি কাটছি,এভাবে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এক্সিল্যান্ড কাজী শারমিন নেওয়াজ বিয়ানীবাজারে গড়ে তুলেছেন নরকের পাহাড়।জাকির হোসেন বলেন,ঘুষের টাকা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় গত বুধবার তাকে সাত দিনের কারাদন্ড দেয়া হয়। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আবুল খায়ের জানান,মাটি কাটা বন্ধে অভিযোগ দেয়ার পরও ব্যবস্থা নেননি কাজী শারমিন নেওয়াজ।সিনিয়র সাংবাদিক এম এ রশীদ অভিযোগ করেন,সরকারি জমিতে বেআইনীভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে জমির স্থায়িত্ব নষ্ট করছে,সেই মাটি/ট্রাক্টর দিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে ভূমিদৃস্যরা সরকারের দেয়া রাস্তা নষ্ট করছে এতো অভিযোগ দেওয়ার পরও কাজী শারমিন নেওয়াজ কোন ব্যবস্থা নেননি পরে শুনা যায় হিস্যা নিয়ে অফিসের চেইনম্যান ওয়াদুদ এর মাধ্যমে এসব ভূমিখেকোদের অনুমতি দিতেন ভূমি কমিশনার কাজী শারমিন নেওয়াজ।ওমর হোসেন অভিযোগ করেন,উচ্চ আদালতে মামলা থাকার পরও প্রতিপক্ষ কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে বিরোধীয় ভূমি থেকে খাজনা আদায় করার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে গেলে এসিল্যান্ড তাকে পুলিশে দেয়ার ভয় দেখান।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতাকে ভয় দেখাতে গত ৪ আগস্ট তিনি আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পৌরশহরে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের উত্তাল সময়ে বিজিবি-পুলিশ নিয়ে পুরো উপজেলা দাপিয়ে বেড়াতেন কাজী শারমিন নেওয়াজ। আন্দোলনে অংশ নেয়া অনেক ছাত্রকে প্রকাশ্যে হুমকি দিতেন তিনি।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি-এসিল্যান্ড) কাজী শারমিন নেওয়াজ জানান,স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে মর্মে তিনি কিছু জানেননা।