মামুনুর রশীদ, ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীলতার ধারাবাহিকতায় ফরিদপুরের ভাঙ্গায় প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষাবাদ করে প্রান্তিক কৃষক পরিবারগুলোর মধ্যে উদ্দীপণার সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমবার গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষাবাদের ভাল ফলনের খবরে পৌর এলাকা ও বারটি ইউনিয়নে কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে পেঁয়াজ চাষে নতুন আশার প্রদীপ জেগে উঠেছে কৃষিজীবি পরিবারগুলোর মাঝ।
ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষি বিভাগের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় ‘নাসিক এন-৫৩’ জাতের পেঁয়াজ চাষ করা হয়। পেঁয়াজের ঘাটতি মোকাবিলা ও আমদানি নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ এ উদ্যোগ নিয়ে ৫০০ জন কৃষকের মাঝে নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বীজ বিতরণ করা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে বীজ বিতরণ করার পর কিছু সংখ্যক কৃষক পরিবার এই জাতের পেঁয়াজ আবাদে আশানুরূপ সাফল্য অর্জনে অন্য সকল কৃষক পরিবারের লোকজনের মধ্যে গ্রীষ্মকালীন কৃষকদের সফলতায় নিশ্চিতে বীজ, সার, বীজতলা তৈরির জন্য পলিথিনসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান করা হয়। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শের পাশাপাশি কৃষি কর্মকর্তারাও একাজে কৃষকদের সহায়তা করেন। বিশেষ করে প্রত্যেক কৃষককে ১ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি সারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হয় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে ভাঙ্গায়।
স্থানীয় কৃষক হাবিব মাতুব্বর জানান, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। আগামীতে তিনি বেশি জমিতে চাষ করবেন।
সফল কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, কৃষি বিভাগের সহায়তায় ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন এবং বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তিনি ভবিষ্যতেও এই চাষ অব্যাহত রাখবেন।
পীরেরচর গ্রামের কৃষক মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, কৃষি অফিসের সহায়তায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের ক্ষেত্রে চারা উৎপাদনই প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে চারা উৎপাদন করতে পারলে পরিচর্যা ও শীতকালীন পেঁয়াজ থেকে কম হলেও প্রতি শতাংশ জমিতে ৩ মণের বেশি ফলন তিনি পেয়েছেন
ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোল্লা আল-মামুন আমার দেশকে বলেন, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও প্রণোদনার মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের তদারকি ও কৃষকদের প্রচেষ্টায় প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে পেঁয়াজ চাষে সফলতা এসেছে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে সকল কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে ওঠলে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং পেঁয়াজ আমদানির প্রয়োজনীয়তা কমে দেশ স্বনির্ভর হয়ে উঠবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।