বিনিময়ে ‘উপহার’ নিতে পারবেন না সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারী

বিনিময়ে ‘উপহার’ নিতে পারবেন না সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারী

অনলাইন ডেস্ক : কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া নিজ প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে কোনো উপহার, স্মারক বা মূল্যবান বস্তু নেওয়া যাবে না। এমন বিধান রেখে সরকারি অ-আর্থিক সংস্থাগুলোর সংস্থা প্রধানসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোড অব কন্ডাক্ট জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

‘অ-আর্থিক সরকারি সংস্থার জন্য কোড অব কন্ডাক্ট’ শিরোনামে সম্প্রতি অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে সেবাগ্রহীতাদের জন্য এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে- যেন তারা সেবা পাওয়ার পর তৃপ্তি ও সন্তুষ্টি অনুভব করে তা প্রকাশ করার সুযোগ পান।

অ-আর্থিক সংস্থা বলতে বোঝানো হয়েছে, দেশের কোনো আইনের মাধ্যমে তৈরি বা পরিচালিত অথবা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, কমিশন, কাউন্সিল, বোর্ড ইত্যাদি।

অর্থ বিভাগের আওতাধীন মনিটরিং সেলের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব রহিমা বেগমের সেই করা এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পরিবারের সদস্যদের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভজনক হতে পারে, এমন কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়া বা অবৈধ বা অস্বাভাবিক সুবিধা নেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুনঃ  প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

এতে বলা হয়েছে, কোনো সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পরিবারের সদস্যদের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভজনক হতে পারে, এমন কোনো কর্মকাণ্ডে তারা যুক্ত হতে পারবেন না। সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক কোনো সুবিধাও নিতে পারবেন না তারা।

এ ছাড়া সংস্থার অনুমোদন ছাড়া সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে কেউ কোনো উপহার বা মূল্যবান বস্তু নিতে পারবেন না। কোন পরিস্থিতিতে কী উপহার ও সুবিধা নেওয়া যাবে, তার তালিকা করাসহ রেকর্ড সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক চলছে

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ভ্রমণসহ প্রাতিষ্ঠানিক ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কর্মচারীদের শেয়ার, সিকিউরিটিজ বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ কেনাবেচা, লেনদেন ও ধারণ করার ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে।

এতে বলা হয়েছে, নিজ সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে কেউ এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না, ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্যও কিছু করা যাবে না। অন্য কোথাও বৈতনিক বা অবৈতনিক অথবা খণ্ডকালীন চাকরিও করা যাবে না।

জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নিজ ধর্মের প্রতি সম্মান বজায় রাখার পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতিও সমানুভূতি প্রকাশ করতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার প্রতি সমান সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে। নিজের কর্মস্থলে হেনস্তা, বৈষম্য বা অন্য যেকোনো অস্বস্তিকর আচরণমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেবাগ্রহীতাদের তৃপ্তি বা অতৃপ্তি, সন্তুষ্টি বা অসন্তোষ ইত্যাদি প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  পয়লা বৈশাখে দেশবাসীকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা

সরকারি কেনাকাটায় কোনোভাবেই আইন বা বিধির ফাঁকে প্রতিযোগিতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে দরপত্র ডাকা যাবে না উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ক্রয়প্রক্রিয়া এমনভাবে সম্পাদন করতে হবে, যাতে কোনোভাবেই স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্বের সূত্রপাত না ঘটে। আর অর্থ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া কোনো ধরনের বৈদেশিক ঋণ নেওয়া যাবে না। বৈদেশিক মুদ্রায় কোনো দায় সৃষ্টির অঙ্গীকারও করা যাবে না।

এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না, চাকরিস্থল ত্যাগও করতে পারবেন না। কেউ কোনো বিমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবেও কাজ করতে পারবেন না। আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কী হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।-ইত্তেফাক

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *