জমে উঠেছে নগরীর ঈদ বাজার : দাম বেশি দাবি ক্রেতাদের

জমে উঠেছে নগরীর ঈদ বাজার : দাম বেশি দাবি ক্রেতাদের

স্টাফ রিপোর্টার : জমে উঠেছে রাজশাহীর ঈদ বাজার। বড় বিপণীবিতান থেকে ফুটপাত সবখানে এখন ক্রেতাদের ভিড়। সরব রয়েছে বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে। সন্ধ্যার পর থেকে বাড়তি চাপ দেখা যাছে অনেক মার্কেটে। তবে দাম বেশি দাবি ক্রেতাদের, মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতা বিক্রেতাদের দর কষাকষিতে সরগরম ঈদ বাজার।

নগরীর আরডিএ মার্কেটে ঢুকতে হলে ধাক্কা না খেয়ে বেরিয়ে আসার উপায় নেই। পা ফেলার জো নেই এ মার্কেটে। নারী-পুরুষ, শিশু সবারই ব্যস্ততা। মার্কেটে মহিলা ক্রেতাদের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি। দোকানগুলোতে চলছে ম্যাচিং আর দরদাম। অনেক দোকানে বিক্রেতারা দাম হাঁকাচ্ছেন ইচ্ছেমত। ক্রেতারাও বুঝে গেছেন বিক্রেতার কারসাজি। চলছে জটিল দামাদামি। তবে অনেক ক্রেতা এ দামাদামিতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন।

রমজানের শুরু থেকে এ বছর রাজশাহীর মার্কেটগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঈদের জন্য। বেশকিছু মার্কেটের সামনে তৈরি করা হয়েছে সুদৃশ্য তোরণ। দোকানগুলোকে ধুয়ে মুছে ঝকঝকে তকতকে করেছেন বিক্রেতারা। এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। তবে ১০ তারিখের পর মার্কেটে গাদাগাদির দশা।

আরও পড়ুনঃ  পুঠিয়া পৌরসভা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে টিসিবির পণ্য

টেইলার্স দোকানেও অর্ডার নেওয়া এখন বন্ধ। নারী ও শিশুদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে বেশি। রাজশাহীর সিল্ক মার্কেটগুলোতেও ভিড় করছে সব বয়সী মানুষ। পছন্দের শাড়ি, থ্রি-পিস কিনছেন এসব মার্কেটে। শুধু সিল্ক নয়, সুতি কিংবা জর্জেট পণ্যের জন্যও সিল্কের শো-রুমগুলো এখন বেশ জনপ্রিয়। রমজানের মাঝামাঝিতে এসে বিভিন্ন ধরনের দেশী-বিদেশি পাঞ্জাবি ও বাহারি পায়জামা কিনতে নগরীর দোকানগুলোতে ক্রেতারা ভিড় করছেন।

নগরীর আরডিএ মার্কেট, সোনাদিঘীর মোড় পৌর বিপণী মাকের্ট ও নিউ মার্কেট এলাকার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা যাচ্ছে। আরডিএ মার্কেটে ভিড় সব থেকে বেশি। এ বছর ঈদ উপলক্ষে নিউ মার্কেট সাজানো হয়েছে নতুন করে। ক্রেতা টানতে এখানকার ব্যবসায়ীরা র‌্যাফেল ড্রয়ের ব্যবস্থা করেছে।

আরডিএ মার্কেটের বস্ত্র ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, তারা প্রস্তুতি শেষ করেছেন গত মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে। এরপর থেকে শুরু হয়েছে বেচাকেনা। তবে যতটা ভালো ব্যবসা তিনি আশা করেছিলেন এখন পর্যন্ত ততটা হয়নি। আগামী দিনগুলোতে ভালো ব্যবসার আশা করছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  বাঘায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উদযাপন 

জহরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, বাচ্চার জন্য জামা কাপড় কিনেছেন। স্ত্রীর জন্য কিনবেন শাড়ি। আর নিজের জন্য পাঞ্জাবি। এ বছর জিনিসের দাম কিছুটা বেশি দাবি করে তিনি বলেন, দামাদামি করে নিজের সামর্থ্যের মধ্যে পছন্দের পণ্যটি কিনতে চেষ্টা করছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদ বাজারের নিরাপত্তার বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, ঈদ বাজারের নিরাপত্তার বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তিনি বলেন, রাজশাহীর পরিবেশ এমনিতে ভালো। কোনো ধরনের জটিলতা এখন পর্যন্ত নেই। তবে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে পুলিশ কমিশনারের কাছে তারা নিরাপত্তার জন্য আবেদন জানিয়েছেন রমজানের শুরুতে। পুলিশ সার্বিক সহায়তা দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে মার্কেটের ব্যবসায়ীদেরও নিজেদের উদ্যোগে নিরাপত্তা রাখার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী মার্কেটগুলোতে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে অভিভাবকদের করনীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

পুলিশ বলছে, রমজানের শুরু থেকে নিরাপত্তা কাঠামো নতুন করে সাজিয়েছে তারা। অন্যান্য সময়ের তুলনায় মাঠে পুলিশের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, রমজানের শুরু থেকে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন আঙ্গিকে পরিবর্তন করা হয়েছে। পুলিশের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। সেহরি, ইফতারের সময়, রাতের বেলা সবসময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। পাশাপাশি ঈদ মার্কেটেও পুলিশ কাজ করছে। সাদা পোশাকেও গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছে।

তিনি বলেন, পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তার বিষয়ে মাঠে রয়েছেন। পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা আশাবাদী সুন্দরভাবেই ঈদের কেনাকাটা শেষ হবে। ঈদ উদযাপন হবে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *