স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর লক্ষীপুর মোড়ে অবস্থিত ঔষধ বাজার নামে মার্কেট গড়ে উঠছে শুধু মাত্র স্যাম্পল ঔষধ বিক্রি করার জন্য। ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা এসব স্যাম্পল দিয়ে চিকিৎসকদের ভিজিট করে। কোম্পানির ঔষধের বিষয়ে অবগত করার জন্য ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা কোম্পানি থেকে এসব স্যাম্পল পেয়ে থাকে। আর এই স্যাম্পল ঔষধগুলো অবশেষে বিক্রি হয় ঔষধের দোকানে। ঔষধের দোকানের লাইসেন্স’এ স্যাম্পল বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও এই মার্কেটের ঔষধের দোকানের মালিকরা কোন আইন মেনে চলে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মার্কেটের ভিতরে প্রায় ১৪ টি ঔষধের দোকানে শুধু স্যাম্পল ঔষধই বিক্রি হচ্ছে।
ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ও চিকিৎসকদের কাছে থেকে ৫০/৬০ শতাংশ কম দামে কিনে এগুলো ১০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে বিক্রি করে এসকল ঔষধের দোকান। যদিও স্যাম্পল ঔষধের প্যাকেটে ” চিকিৎসকের জন্য বিক্রয় নিষিদ্ধ ( physician’s Sample, Not For Sale) লিখা থাকে তারপরও এগুলো ব্যপকভাবে বিক্রি হচ্ছে। এই সব স্যাম্পল ঔষধ বেশিরভাগ গ্রাম্য ডাক্তাররা কিনে নিয়ে যায়, তবে শহরের অনেক ঔষধের দোকানদারও এই সব স্যাম্পল ঔষধ কিনে বেশি দামে বিক্রি করে এমন তথ্য পাওয়া যায় স্যাম্পল ঔষধের দোকানের এক করমর্চারীর কাছে থেকে।
এ বিষয়ে দেশের সুপরিচিত একটি ঔষধ কোম্পানির আঞ্চলিক বিক্রয় ব্যাবস্থাপক ( RSM- Regional Sales Manager) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমরা স্যাম্পল ঔষধ দিয়ে চিকিৎসকদের ভিজিট করি আমাদের ঔষধ রুগীদের দিয়ে সেই ঔষধ কেমন কাজ করে সেটা জানার জন্য পাশাপাশি আমাদের স্যাম্পল ঔষধগুলো সামনে থাকলে সেই ঔষধ চিকিৎসকের লিখতেও সহজ হবে সেজন্য “। স্যাম্পল বিক্রির বিষয় নিয়ে তিনি বলেন “এটা বিভিন্ন কারনে বিক্রি হয়, তবে বিক্রি করাটা উচিত না।”
ঔষধ বাজার বা টিনশেড মার্কেট বা স্যাম্পল মার্কেট নামে পরিচিত এই মার্কেটে অবস্থিত মেসার্স আতিয়া হুমায়রা ফার্মেসীর মালিক আনোয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্যাম্পলের সাথে কমার্শিয়াল ঔষধও বিক্রি করে বলে জানান এবং পরবর্তী প্রশ্ন করার সাথে সাথে নেটওয়ার্ক সমস্যা হচ্ছে বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ঠিক একই কাজ করে শাফিন ফার্মেসীর মালিক ইমতিয়াজ আহমেদ তিনি সাংবাদিক পরিচয় জেনে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এই মার্কেটে অবস্থিত বিসমিল্লাহ ফার্মেসী, আতিয়া হুমায়রা ফার্মেসী, তোয়া ফার্মেসী, হাসি খুশি ফার্মেসী,আলহামদুলিল্লাহ মেডিসিন কর্নার, মহিম ফার্মেসী, হিমেল ড্রাগ হাউস, ইরফান ফার্মেসী, ফ্রেন্ডস ড্রাগ এন্ড সার্জিক্যাল, মদিনা ফার্মেসী, অভি ড্রাগ এন্ড সার্জিক্যাল, সরদার ফার্মেসী সবগুলোতেই স্যাম্পল ঔষধ বিক্রি করা হয়।
বেআইনিভাবে স্যাম্পল বিক্রির বিষয়ে রাজশাহী ড্রাগিস্ট এন্ড কেমিস্ট সমিতির নেতৃবৃন্দ কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি।
বেআইনিভাবে স্যাম্পল ঔষধ বিক্রি করার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী ড্রাগ সুপার মো: শরিফুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রায় সময়ই অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা ও মামলা দিই তারপরও এরা ব্যবসা করে। ড্রাগ লাইসেন্স করার সময় স্যাম্পল বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়, এমনকি লাইসেন্সে লিখাও আছে স্যাম্পল বিক্রি করা যাবে না।” তিনি আরও জানান “লক্ষিপুর মোড়ের স্যাম্পল মার্কেটে অভিযান করেছি জরিমানা ও মামলা করাও হয়েছে, আমআদের জনবল কমের জন্য নিয়মিত অভিযান করতে পারিনা তাছাড়া অভিযানের জন্য জেলা প্রশাসকের সহযোগিতারও প্রয়োজন হয়, তারপরও আমি চেস্টা করবো অভিযান করে স্যাম্পল বিক্রি বন্ধ করার।”