স্টাফ রিপোর্টার: আগামী বুধবার (২১ জুন) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অন্তত ৬০ শতাংশ ভোট পড়ার আশা করছেন আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। অবশ্য প্রচার শুরুর পর থেকেই তিনি ৭০ শতাংশ ভোট পড়ার আশার কথা বলে আসছিলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এখন ভোটের আশা ৬০ ভাগে নামিয়েছেন লিটন। ভোটের প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি ৬০ ভাগ ভোট পড়ার আশার কথা জানান। শহরের একটি রেস্তোঁরায় এই মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘এই নির্বাচনে তিনজন মেয়রপ্রার্থী ছাড়াও ১১২ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন। সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী আছেন আরও ৪৬ জন। কাউন্সির প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ভোটার আনবেন। সবমিলিয়ে অন্তত ৬০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি আশা করছি।’
নির্বাচনে দুজন মেয়রপ্রার্থী থাকলেও হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে খায়রুজ্জামান লিটন ফাঁকা মাঠেই গোল দিতে যাচ্ছেন কি না এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘খুশি হতাম যদি বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতো। নানাভাবে তাদের অনুরোধ করা হলেও তারা নানা রকম শর্ত জুড়ে দিয়েছে এবং ভোটে আসেনি। এখন তারা ভোটে না আসলে তো কিছু করার নেই। যারা এসেছে, তাদের নিয়েই ভোট হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে যে সাড়া আশা করেছিলাম, তার চেয়েও বেশি পেয়েছি। মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিয়েছে। জনগণের মধ্যে আগ্রহের কমতি নেই।’
এই নির্বাচন বিএনপি বর্জন করলেও তাদের মিত্র দল জামায়াতে ইসলাম অংশগ্রহণ করেছে। দলীয় সিদ্ধান্তেই সাধারণ কাউন্সিলর পদে তাদের ছয়জন ও সংরক্ষিত নারী আসনে দুজন প্রার্থী আছেন। তারা এই নির্বাচনে কোন সহিংসতা করতে পারে কি না জানতে চাইলে লিটন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুতি রেখেছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর তালিকা করেছে। আমরাও কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা দিয়েছি। আমাদের নেতাকর্মীরাও সজাগ থাকবেন। কেউ পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে।’
এই অনুষ্ঠান থেকেও সদ্য সাবেক সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আরেকবার নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে রাজশাহীর মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবেন। ভারতের সঙ্গে নৌপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের পথ খোলা হবে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে সরাসরি বাস, ট্রেন ও বিমান চলাচল শুরু করাসহ আরও নানা প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এসব প্রতিশ্রুতির অনেকগুলোই একজন সিটি মেয়রের অধীনের কাজ নয়। এগুলো তিনি বাস্তবায়ন করবেন কীভাবে তা জানতে চাইলে লিটন বলেন, ‘এগুলো মেয়রের কাজ না। মেয়রের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে না। তারপরও মেয়র মনে করলে এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে। এগুলো জটিল কোন বিষয় না। সে জন্য আমি এই প্রতিশ্রুতিগুলো দিচ্ছি। আমার ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি আছে তার কিছু পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন সম্ভব। আর কিছু বাস্তবায়নে সময় লাগবে ১০ বছর।’
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান, মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, নাইমুল হুদা রানা, সৈয়দ শাহাদাত হোসেন, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, যুগ্ম সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।