Home রাজশাহী উৎসবমুখর পরিবেশে রাসিক নির্বাচনে ভোট শুরু

উৎসবমুখর পরিবেশে রাসিক নির্বাচনে ভোট শুরু

উৎসবমুখর পরিবেশে রাসিক নির্বাচনে ভোট শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: উৎসবমুখর পরিবেশে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৮টায় নগরীর ১৫৫টি কেন্দ্রে একযোগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে এটি চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোটে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সকালে ভোট শুরুর আগেই বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোটারের লাইন পড়ে যায়। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারেরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। পুরুষদের একটি কক্ষে প্রথম ভোট দেন নাজির উদ্দিন। বেরিয়ে এসে তিনি জানান, ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। কেন্দ্রেই আগে ইভিএমে ভোট দেওয়ার নিয়ম জানানো হয়েছিল।

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জহুরুল ইসলাম জানান, ইভিএম চালু করতে কোনো সমস্যা হয়নি। সময়মতো ভোট শুরু হয়েছে।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এবার মেয়রপ্রার্থী হয়েছিলেন চারজন। এর মধ্যে গত ১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন সেখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা হলে দলটি রাজশাহীর নির্বাচনও বর্জন করে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে দলটির মেয়রপ্রার্থী মুরশিদ আলম সংবাদ সম্মেলন করে সেদিন রাতেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তবে ইভিএমে এখনো দলটির হাতপাখা প্রতীক রয়েছে। ভোটাররা চাইলে ভোটও দিতে পারবেন।

ভোটের মাঠে থাকা অন্য তিন মেয়রপ্রার্থী হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী লতিফ আনোয়ার।
নির্বাচনে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটের মাঠে আছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে আছেন প্রায় ৩০০ র‍্যাব সদস্য। ১২ প্লাটুন বিজিবিও নগরীতে টহল দিচ্ছে। প্রতি প্লাটুনে আছেন ২০ জন করে বিজিবি সদস্য। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে রয়েছেন। বিশৃঙ্খলা হলে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন তারা।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার পাশাপাশি ১০ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটকেন্দ্রগুলোতে রয়েছেন মোট ৩ হাজার ৬১৪ জন কর্মকর্তা। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে কমিশন। কোথাও বিশৃঙ্খলা দেখতে পেলে ঢাকা থেকেই প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন কমিশনের কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত ২ জুন থেকে ১৯ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন প্রার্থীরা। এবার ৩০টি ওয়ার্ডে ১৫৫টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১৪৮ কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। এবার ১ হাজার ১৫৩টি কক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী ছাড়াও ১১২ জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া ১০টি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য লড়ছেন ৪৬ প্রার্থী। তবে নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

পদ্মাপাড়ের ৯৬ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই সিটিতে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ১৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭১ হাজার ১৮৫ জন, আর নারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৭২ জন। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৬ জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here