স্টাফ রিপোর্টার : ‘আমার বয়স ৯৮ বছর। এবার প্রথম ভোট দিলাম ইভিএমে। এর আগে আমি ব্যালটে ভোট দিয়েছি। আমার কাছে ইভিএম সহজ মনে হল। শেষ বয়সে এসে ইভিএমে ভোট দেওয়ার স্বাদ পেলাম।’
এভাবে কথাগুলো বলছিলেন শ্রী ভদ্র রানী। তিনি নগরীর মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দিতে এসেছিলেন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেওয়া শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের ভোটারদের ব্যালট পেপারে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই প্রথম সিটির সব ওয়ার্ডে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। যদিও ২০১৮ সালে রাসিকের শুধু মাত্র ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর বাকি ২৯টি ওয়ার্ডে ব্যালট পেপারে ভোট দেন ভোটাররা।
এবার রাসিকের ৩০টি ওয়ার্ডে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন ভোটার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন এবং নারী ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন। আর নতুন ভোটার রয়েছে ৩০ হাজার ১৫৭ জন। তারা ১৫৫টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেবেন।
ভোটার মো. শামসুজ্জামান বলেন, ভোটার হওয়ার পর থেকে সব ভোট ব্যালট পেপারে দিয়েছি। টেলিভিশনে ইভিএম মেশিন দেখেছি। অনেকের মুখে শুনেছি ইভিএমে ভোট দেওয়ার কথা। কিন্তু এই প্রথম ইভিএম মেশিনে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা হলো। শুধু মাত্র আমাদের প্রজন্মই বলতে পারবে একই সঙ্গে ব্যালট পেপার ও ইভিএমে ভোট দেওয়ার কথা।
তিনি বলেন, আমার ছেলে এবার নতুন ভোটার হলো। সে কখনও ভোট দেয়নি। এবার প্রথম ভোট তার। সে ইভিএমে ভোট দেবে। তারও ইভিএমে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা হলো। নির্বাচনী পরিবেশ অনেক ভালো লাগলো।
ভোটার রবিউল ইসলাম বলেন, গত নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ভোট দিয়েছি। এবার ইভিএমে ভোট দিলাম। অনেক ভালো লাগছে। খুব দ্রুত ভোট দেওয়ার দুই ধরনের স্বাদ পেলাম। বাবা-দাদাদের যুগ শেষ। তাদের ব্যালট পেপারের যুগ ছিল। আমাদের ডিজিটাল যুগ। কোনো সিল মারামারি নাই। শুধু বোতাম টিপে ইভিএমে ভোট দিতে হবে।
নতুন ভোটার সাকিলা ইসলাম (১৯)। তিনি বলেন, জীবনের প্রথম ভোট দিলাম। অনেক ভালো লাগছে। সকালে মায়ের কাছে শুনে এসেছি ভোট কিভাবে দিতে হবে। তার পরেও প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না। পরে বুঝে শুনে ভোট দিয়েছি। জীবনের প্রথম ভোট। আশা করছি, যে প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি। তিনি জয়যুক্ত হবেন।
ভোটার সুমনা ইসলাম (৪০) বলেন, নতুন অভিজ্ঞতা হলো ইভিএমে ভোট দিয়ে। যতবার ভোট দিয়েছি প্রত্যেক বার ব্যালট পেপারে। এই প্রথম ইভিএমে ভোট দিলাম। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ ভালো লেগেছে। আর লাইনে বেশি সময় দাঁড়াতে হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোট দিতে পেরেছি।
মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৫৯১ জন। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১৫৫টি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে একযোগে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।