সম্প্রীতি রক্ষায় নতুন প্রজন্মের  করণীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : এমপি বাদশা

সম্প্রীতি রক্ষায় নতুন প্রজন্মের করণীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : এমপি বাদশা

স্টাফ রির্পোটার : মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম আকাক্সক্ষা সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় দেশের নতুন প্রজন্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করণীয় এবং দায়িত্ব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। সোমবার বেলা ১২টায় শহরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত ‘সামাজিক সম্প্রীতি সংলাপ’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।‌

 

ফ্রিডম অফ রিলিজিওন অর বিলিফ লিডারশিপ নেটওয়ার্কের সহযোগিতায় ইয়ুথ অ্যান্ডিং হাঙ্গার, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট এই সংলাপের আয়োজন করে। এতে রাজশাহীর বিভিন্ন তরুণ ও যুব সংগঠনের প্রতিনিধি, আদিবাসী ছাত্র ও যুব প্রতিনিধিসহ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা ও এর গুরুত্ব তুলে ধরে বিজ্ঞ সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী আমাদের দেশে যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয় সেটি হচ্ছে; বাহাত্তরের সংবিধান।‌ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংসদে এই সংবিধান পাশ করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘এটি শুধুমাত্র কলমের কালি দিয়ে লেখা কোন সংবিধান নয়; এটি ত্রিশ লাখ শহিদের রক্ত দিয়ে লেখা সংবিধান। বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সেই সংবিধানেই লিপিবদ্ধ আছে; বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি হবে বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক রাষ্ট। যার মালিক হবে জনগণ। নিজ নিজ ধর্ম পালনে থাকবে স্বাধীনতা। সু-প্রতিষ্ঠিত হবে সামাজিক সম্প্রীতি।

আরও পড়ুনঃ  নিয়ামতপুরে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

 

তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো যদি আমাদের নতুন প্রজন্ম না জানে- বা উপলব্ধি না করে; তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত আকাঙ্খা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না। কারণ, আমাদের যতটুকু করণীয় ছিল, আমরা তা করার চেষ্টা করেছি; বাকিটুকুর জন্য নতুন প্রজন্মকেই দায়িত্ব নিতে হবে। আপনারা মনে রাখবেন, বাংলাদেশ যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে জন্ম নিয়েছিল, সে অনুযায়ী যদি আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে না ওঠে তাহলে আমাদের সকল অর্জনই বৃথা হয়ে যাবে। আমরা অন্ধকারে তলিয়ে যাবো। অতএব এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে নতুন প্রজন্মের উচিত বাহাত্তরের সংবিধান পাঠ করা। আমার একান্ত বিশ্বাস, বর্তমান প্রজন্ম অবশ্যই স্বাধীনতার চেতনাকে উপলব্ধি করে প্রিয় মাতৃভূমিকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  বাগমারায় বিএনপি’র বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখী শোভাযাত্রা

 

সংলাপে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতলের আদিবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা ও তাদের সম্প্রীতির সাম্প্রতিক বাস্তবতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা। বলেন, সংবিধানে আদিবাসীদের ‘আদিবাসী’ না বলে ‘নৃগোষ্ঠী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যা আদিবাসী জনগোষ্ঠী এখন পর্যন্ত মেনে নেয়নি। তারা এটির বিরোধিতা করে অনেকদিন ধরে বাতিল করার দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের দাবির সঙ্গে আমরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছি। যার কারণে আমি সংসদে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেয়ার সময় আদিবাসীদের নৃগোষ্ঠী নয় বরং আদিবাসী হিসেবেই আখ্যায়িত করি। দেশে সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বড় বাঁধা। অতএব এ ধরনের আইনকানুনে যে সকল ত্রুটি বিচ্যুতি আছে; সেসব দূর করতে আমরা বেশকিছু প্রস্তাব প্রণয়ন করেছি; যা আগামীতে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল

 

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। তাদের জন্য আলাদা একটি মন্ত্রণালয় করার ফলে তারা কিছু বরাদ্দ পায়, এতে তাদের অর্থনৈতিক কিছুটা উন্নয়ন হলেও সমতলের আদিবাসীরা এ ক্ষেত্রে বঞ্চিত। সমতলের আদিবাসীরা এখনো বৈষম্য ও বঞ্চনার শিক্ষার হচ্ছে। সমতলের আদিবাসীদের জন্যও যদি আলাদা একটি মন্ত্রণালয় গঠন করা হয় তবে তারাও একটি বরাদ্দ পাবে এবং তাদের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটবে। ইতিমধ্যেই মানবাধিকার কমিশন আমাদের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে এবং দ্রুতই তা সরকারের কাছে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

 

ইস্ট অ্যাসিলেটর গ্রুপের রাজশাহীর সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম বাদশার সভাপতিত্বে সংলাপে ইসলামী ফাউন্ডেশনের রাজশাহীর উপপরিচালক রাজ্জাকুল আহমেদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের রাজশাহীর সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক আহমেদ সফি উদ্দিন, রাজনৈতিক নেতা আশরাফুল হক তোতা, আদিবাসী নেতা বিমল চন্দ্র রাজোয়ার প্রমুখ।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *