বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

রাজশাহীতে গাড়ির গ্যারেজ থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে গাড়ির গ্যারেজ থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে গ্যারেজে থাকা পাঁচটি গাড়ি এবং পাশের ১১ তলা ভবনের ২টি ফ্লোর পুড়ে গেছে। তিন ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। নগরীর বোয়ালিয়া থানার মোড় এলাকায় শুক্রবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে লাগা আগুন নেভানো হয় সকাল ৭টায়।

আগুনের পর ১১ তলা ভবনটির তিনতলায় বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটের ভেতরের দেয়ালে ফাটল দেখা গেছে। বাসিন্দারা বলছেন, আগুন লাগার পর তাড়াহুড়ো করে বাইরে গিয়ে পরে বাসায় ফিরে এই ফাটল দেখেছেন তারা। ভবনটির ১১তলা জুড়ে অন্তত ৪৫টি ফ্ল্যাটের কোনটিতেই বিদ্যুৎ নেই। ফলে অনেকেই যে যার মতো নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনের সুত্রপাত ১১তলা ভবনের পাশের কার কেয়ার সেন্টার থেকেই। পরে বহুতল ভবনের দোতলা পুড়ে শেষ হয়ে যায়। আগুন না ছড়ালেও ভালো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভবনটির তিন ও চার তলা এবং উত্তর দিকের ১১তলা ভবনের বাইরের পুরো দেয়াল।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, রাত তিনটা ১০ মিনিটে তারা খবর পান। এরপর প্রথমে ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এলেও আগুনের ভয়াবহতা দেখে পরে আরও ১০টি ইউনিট আগুন নেভাতে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে যোগ দেয় সেখানে।

রফিকুল ইসলাম বলেন, মূলত কার কেয়ার সেন্টারে গাড়ির বিভিন্ন দায্য পদার্থ থেকে আগুনটা দ্রুত ছড়িয়েছে। এই সেন্টারের ভেতরে আগুন নেভানোর সময় দেয়া গেছে অবিস্ফোরিত অসংখ্য মবেলের বড় কৌটা।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পরপরই গ্যারেজের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরনের পর উড়ে বাইরে এসে পড়ে। গ্যারেজে কাজ করা এক কর্মী জানান, আগুনে ভেতরে থাকা মোট ৫টি গাড়ির প্রতিটিই পুড়ে গেছে। তাদের গাড়ি মেরামত করার স্বংয়ক্রিয় সন্ত্রপাতিসহ ভেতরে থাকা নগদ টাকাও পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ৮ কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি।

এদিকে গ্যারেজ লাগোয়া নূরে হায়াত নামে ১১ তলা বহুতল ভবনটির উত্তরপাশ পুরোটি পুড়ে কালো হয়ে গেছে এগারো তলা পর্যন্ত। সেখানে দোতলায় অবস্থিত গ্র্যান্ড তোফা নামে একটি কনভেনশন সেন্টার। সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভবনটির দোতলায় থাকা চেয়ার টেবিল, এসি ও ডেকরেশনের প্রতিটি জিনিস পুড়ে যায়। সেখান থেকে ওপরের তলায় আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়ে। তিন তলার ফ্লোর গরম হয়ে ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। আগুন ধরে যাওয়ার সাথে সাথে ভবনের বাসিন্দারা ভবন থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক সুব্রত কুমার এই ভবনের ৬ তলায় থাকেন। তিনি জানান, আগুনের পরপরই সবাই যে যার মতো ভবন থেকে বের হতে শুরু করে। লিফট বন্ধ থাকায় সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় অনেকে ধোঁয়ার কারনে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন সবাই আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। পুরো ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ নষ্ট হযে যাওয়ায় এখন কোন বাসিন্দাই ইচ্ছা থাকলেও এখানে থাকতে পারছেন না।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, আগুনের খবর পাওয়ার সাথে সাথেই পুলিশ ফোর্স দিয়ে জনগণকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে রাজশাহীতে বহুতল ভবনে এতো অয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা এটিই প্রথম।

সর্বাধিক পঠিত

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com