বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

৪৪ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন নারী কাউন্সিলর

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভার নারী কাউন্সিলর জলিদা বেগমের বয়স ৪৪ বছর। এই বয়সে আগ্রহ নিয়ে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নবম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি পেয়েছেন ৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট।
কাউন্সিলর জলিদা বেগম বলেন, গত ২০২১—২২ শিক্ষাবর্ষে আমি কয়ামাজমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কারিগরি শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। নবম শ্রেণির বোর্ড ফাইনলাম পরীক্ষা আমি ৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট পেয়েছি। আমার বয়স এখন ৪৪ বছর চলছে। এখন চাকরির বয়স নেই। চাকরি করার ইচ্ছাও নেই। অভাবে ছোটবেলায় লেখাপড়া করতে পারিনি। অভাবের সংসার হওয়ায় মা বাবা ছোটবেলাতেই বিয়ে দিয়ে দেন। তাই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
জলিদা আরও বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি। নিজ এলাকায় প্রায়ই সালিস দরবার করতে হয়। এখনকার যুগে সবাই শিক্ষিত। আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে অশিক্ষিত। এজন্য অনেকেই হাসি ঠাট্টা করে। অনেকেেই গোনায় ধরে না। সালিস দরবারে আমার স্বাক্ষর দেখলে অনেকেেই মুখ চেপে হাসে। তখন নিজেকে খারাপ লাগে। যে কারণে বয়স বেশি হলেও পড়ালেখা শুরু করি।
সরেজমিন উপজেলার কয়ামাজমপুর পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কয়ামাজমপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে কারিগরি বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভকেশনাল) ফাইনাল পরীক্ষা হয়। আজ রোববার পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০২ নম্বর কক্ষে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে (ইংরেজি) বিষয়ে পরীক্ষা দেন নারী কাউন্সিলর জলিদা বেগম।
জানা যায়, কাউন্সিলর জলিদা বেগমের বাড়ি দুর্গাপুর পৌর এলাকার নান্দোপাড়া গ্রামে। তিনি দুর্গাপুর পৌরসভার সংরক্ষিত নারী আসন সিংগা—বহরমপুর, রৈপাড়া ও নান্দোপাড়া—চৌপুকুরিয়া ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর। তিনি ৩ সন্তানের জননী।
কয়ামাজমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব সাজ্জাদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বয়স বেশি হলেও পড়ালেখায় ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে জলিদার। প্রতিটি পরীক্ষা তিনি ভালোভাবে দিচ্ছেন। তাঁর লেখার মধ্যে কোনো জড়তা দেখা যায়নি। লেখাপড়ার প্রতি জলিদা বেগমের এই আগ্রহ অনেক স্বল্পশিক্ষিতকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
দুর্গাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহীদুল হক বলেন, ‘লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। আগে সুযোগ পাইনি। তাই সে এখন পড়ালেখায় আগ্রহী। এখন এসএসসি পরীক্ষায় বসেছে। এটা তরুণ সমাজের জন্য ভালো একটা বার্তা।’

সর্বাধিক পঠিত