শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

রাজশাহীতে হোটেলের কক্ষ যেন সোনার হরিণ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার কারণে এবারও শহরের সব আবাসিক হোটেলের কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে। অন্তত ১৫ দিন আগেই হোটেলগুলোর সব কক্ষ বুক হয়ে গেছে। আগামী ২৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত শহরের কোন হোটেলে একটি কক্ষও ফাঁকা নেই।

রাবিতে ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রতিবছরই রাজশাহীর হোটেল কক্ষ সোনার হরিণ হয়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তারপরও অনেকে এই হোটেল থেকে অন্য হোটেলে ঘুরছেন আত্মীয়-স্বজন কিংবা পরিচিত কারও জন্য একটি কক্ষ পাওয়ার আশায়। শেষ পর্যন্ত তাদের হতাশই হতে হচ্ছে।

রাজশাহী আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির তথ্যমতে, শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬৫টি আবাসিক হোটেল আছে। এসব হোটেলে প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন মানুষ থাকতে পারেন। কিন্তু রাবির ভর্তি পরীক্ষার সময় রাজশাহী আসেন এরও বহুগুণ মানুষ। তাই সবাই হোটেলে উঠতে পারেন না।

রাবিতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষার জন্য এ বছর চূড়ান্ত আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪ জনের। ২৯ মে প্রথমে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে। এরপর ৩০ মে ‘এ’ ইউনিটের এবং ৩১ মে ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মিলিয়ে প্রায় তিন লাখ মানুষ আসবেন রাজশাহী শহরে।

রাজশাহী নগরীর রেলগেট এলাকার হোটেল ডালাস ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন জানান, রাবির ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই তাদের হোটেলকক্ষ বুক হতে শুরু করে। ১৫ দিন আগে সব কক্ষ শেষ হয়ে গেছে। এখনও অনেকে ফোন করছেন, অনেকে স্বশরীরে আসছেন। কিন্তু কাউকে আর কোন রুম দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

রাজশাহীর নিউমার্কেট এলাকার হোটেল ওয়ে হোমের ব্যবস্থাপক মো. শরিফ জানান, বাইরের কোন পরীক্ষার্থীকে এই হোটেলের কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি। হোটেল মালিক ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জন্যই ৩৩টি কক্ষ বুক হয়ে গেছে।

রাজশাহী আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার হাসান কবীর জানান, পরীক্ষার্থী যত আসে, সবাইকে হোটেলে রাখা সম্ভব হয় না। হোটেলে বড়জোর ১ হাজার ৮০০ জন থাকতে পারে। বাকিদের বিভিন্ন মেস কিংবা ছাত্রাবাসে আশ্রয় নিতে হয়। এবারও তাই হবে।

রাজশাহী মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমান জানান, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মেসে রাখার ব্যাপারে এবারও তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরীক্ষার্থীরা মেসে বিনামূল্যেই থাকতে পারবে। তবে কোন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে অভিভাবক থাকলে মেসভেদে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

তিনি জানান, রাজশাহী শহরে প্রায় ৫ হাজার মেস রয়েছে। এসব মেসে এখন ১০ থেকে ১৫ ভাগ সিট খালি রয়েছে। পরীক্ষার সময় প্রায় ৫০ হাজার পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক থাকতে পারবেন। এনায়েতুর রহমান বলেন, সবার পরীক্ষা একসঙ্গে হয় না। আবার আশপাশের জেলাগুলোর পরীক্ষার্থীরা শহরে থাকেও না। তাই মেসে জায়গার কোন সংকট হবে না।

বিশ^বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কারণে এবার পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের তিনটি ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীর চাপ বিবেচনায় অন্য পাঁচটি ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব ট্রেন রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। ২৭ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ট্রেনগুলো কোন সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়াই বাড়তি কোচ নিয়ে চলাচল করবে।

সর্বাধিক পঠিত