স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ইয়াজপুর মাঠে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাঁড়িয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. মনিরুল (৪৫) নামের আরও এক চাষি মারা গেছেন। তার বাড়ি গুসিরা গ্রামে।
এর আগে সোমবার সকালে ইয়াজপুর মাঠে প্রতিপক্ষের হামলায় ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। তারা হলেন- জমির মালিক দাবিদার রাজশাহী নগরীর ভাটাপাড়া এলাকার সোহেল রানা ছোটন (৪৫) এবং দুই বর্গাচাষী গোদাগাড়ীর পাকড়ির বড়গাছি কানুপাড়া গ্রামের নাইমুল ইসলাম (৮০) এবং তার ভাই মেহের আলী (৭০)। নিহত মনিরুল সোমবার রাতে মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত সোহেল রানার ছোটভাই মো. হৃদয় (৩৩) বাদী হয়ে রাতেই থানায় হত্যা মামলা করেছেন। তিনি এজাহারে বলেছেন, তার ভাই একবছর আগে কেনা জমিতে বর্গচাষীদের নিয়ে ধান লাগাতে গিয়েছিলেন। এ সময় অতর্কিতভাবে প্রতিপক্ষরা চারপাশ থেকে ঘিরে তাদের ওপর হামলা করেন। এতে তিন বর্গাচাষী ও তার ভাই নিহত হন। আহত হন অন্যরা।
জানা গেছে, এই মামলার এক নম্বর আসামি পাকড়ি পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশিকুর রহমান চাঁদ। তাঁর দাদার প্রায় ৫০০ বিঘা জমি ছিল। এসব জমি এখন হাজী মানিকউল্লা শেখ ওয়াকফ এস্টেটের। এর মোতোয়ালী হিসেবে সবকিছু দেখাশোনা করেন চাঁদ। তিনি দাবি করছেন, এই এস্টেটের ১৪ বিঘা জমি সোহেলসহ কয়েকজন ব্যক্তি নিজেদের নামে করে নিয়েছেন। এই বিরোধের কারণেই সোমবার সোহেলসহ তার বর্গাচাষীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
চারজনকে হত্যার এ মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হলেন- মোশড়াপাড়া গ্রামের ইউনুস আলী (২২), ওমর ফারুক (৪০), আনারুল ইসলাম (৪৫), মঞ্জুর রহমান (৩০), মোহনপাড়া গ্রামের মো. আতাউর (৫০), হায়দার আলী (৪৫) এবং কাশিয়াডাঙ্গা ফেত্তাপাড়ার রজব আলী (৩৯)। এদের মধ্যে ইউনুস ও রজব রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, সাত আসামির মধ্যে পাঁচজনকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শম্ভু চাঁদ মণ্ডল তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছেন। তবে রিমান্ড আবেদনের শুনানি এখনও হয়নি। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই আসামি সুস্থ হলে তাদের আদালতে তোলা হবে।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত রামেকের মর্গে নিহত চারজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত চলছিল। গ্রামে লাশ যাওয়ার পর লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। মোশড়াপাড়ায় আক্রমণ করে জ¦ালাও-পোড়াও হতে পারে। সেই আশঙ্কায় এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে গ্রামের পুরুষেরা আত্মগোপন করেছেন।