শুক্রবার, মে ১০, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

ভূমি অফিসের অফিস সহকারীর ঘুষ নেওয়ার, ভিডিও ভাইরাল

অনলাইন ডেস্ক : কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আব্দুল কাদির মিয়া অফিসের চেয়ারে বসে জনৈক সেবাপ্রার্থীর কাছ থেকে গুনে গুনে ঘুষ নিচ্ছেন। এমনই একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপর থেকে এলাকায় বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসীও। ঘটনার পর অভিযুক্ত অফিস সহককারীকে শোকজ করা হয়েছে।

ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, নিজ কর্মস্থলে বসে প্রকাশ্যে সেবা নিতে আসা ভোলা মিয়ার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা গুনে নিচ্ছেন। ভোলা মিয়া বলছেন, ‘সকল খারিজ সমান নয়। গরীব মানুষ কাজটা করে দিয়ে দেন।’ জবাবে আব্দুল কাদির বলছেন, ‘কথা ছিল ৬ হাজার টাকা দিবেন। কম দিতে পারবেন না। প্রয়োজনে পরে হলেও দিতে হবে। একটা কাজ করে কিছু টাকা পাওয়া না গেলে চলে না।’ এরপর টাকাগুলো গুনে পকেটে ভরে রাখেন কাদির মিয়া। চলে যাওয়ার সময় ভোলা মিয়া আবারও বলেন, ‘আরও এক হাজার টাকার আবদার করেছেন, একটা বিহিত হবে। আপনি কাজটা করে রাখুন।’

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলাকাবাসী। মুখ খুলতে শুরু করেছেন তারা। তাদের অভিযোগ, ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম ও অফিস সহকারী আব্দুল কাদির মিয়া। ভূমি সংক্রান্ত যে কোনো কাজে গেলে সরকারি ফি ছাড়াও কয়েক গুণ অতিরিক্ত টাকা গুঁজে দিতে হয় তাদের পকেটে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, যে জায়গা খারিজ করতে তিন হাজার টাকা লাগে, সেখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। শুধু তাই নয় টাকা দিয়েও অনেক সময় হয়রানির শিকার হতে হয়। মাসের পর মাস ঘুরতে হয়।

অপর এলাকাবাসী ফুল মিয়া বলেন, আমি আমার একটা জমি খারিজ করতে এসেছিলাম। ২৪ শতাংশ জমির জন্য ২৩ হাজার টাকা চেয়েছে। পরে খারিজ না করে চলে যাই।

সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, আব্দুল কাদিরের নিজ গ্রামে একটি আলিসান বাড়ি ছাড়াও ঢাকাতেও বাড়ি রয়েছে। ১৯৯৭ সালে পল্লী বিদ্যুতের চাকরি ছেড়ে ভূমি অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন আব্দুল কাদির। এরপর থেকে ফুলে-ফেঁপে বাড়তে থাকে তার অর্থ-সম্পদ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাদির মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ইতিমধ্যে আমাকে শোকজ করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলবো না।

ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। অফিস সহকারী আব্দুল কাদিরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম জানান, ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রকাশের পর আব্দুল কাদিরের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বাধিক পঠিত