বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

বাড়িতে পৌঁছে যাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স

স্টাফ রিপোর্টার: ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত হওয়ার পরে তা সংগ্রহ করতে আর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) কার্যালয়ে যেতে হবে না। লাইসেন্স প্রস্তুত হয়ে গেলে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষই ডাক কিংবা কুরিয়ারের মাধ্যমে আবেদনকারীর বাড়িতে পৌঁছে দেবে। আর এখন থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বায়োমেট্রিকে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার জন্যও দিনের পর দিন ঘুরতে হবে না।

এখন থেকে আবেদন করার পরই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙ্গুলের ছাপ দিতে হবে। তারপর লিখিত, ব্যবহারিক এবং মৌখিক পরীক্ষা। আগে তিনটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শুধু বায়োমেট্রিকের জন্যই দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। বায়োমেট্রিক না হওয়া পর্যন্ত লাইসেন্সের জন্য ফি জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। আর ফি জমা না হলে লাইসেন্স প্রস্তুতের কাজও শুরু হতো না। নতুন প্রক্রিয়ায় দ্রুত লাইসেন্স দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণকারীদের ভোগান্তি নিরসনে মঙ্গলবার বিআরটিএ’র রাজশাহী বিভাগ ও সার্কেল অফিসের উদ্যোগে একই দিনে সকল পরীক্ষা ও বায়োমেট্রিক গ্রহণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করা হয়েছে। সকালে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল নিজের বায়োমেট্রিক দিয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা, বিআরটিএর রাজশাহী বিভাগের পরিচালক আশরাকুর রহমান, ডেপুটি সিভিল সার্জন রাজিউল ইসলাম, বিআরটিএর বিভাগের উপ-পরিচালক এএসএম কামরুল হাসান, রাজশাহী সার্কেলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল খালেক, সহকারী পরিচালক (সাধারণ) নজির উদ্দিন, পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন ও শরফ উদ্দিন আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নতুন প্রক্রিয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে আবেদনকারীদের ভোগান্তি কমবে বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন। একই কথা বলছেন লাইসেন্স প্রত্যাশীরাও। মঙ্গলবার সকালে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ধোপাপাড়া গ্রামের ট্রাকচালক মো. আল-আমিন (২৫)। তিনি বলেন, ‘আগে সব পরীক্ষায় পাস করার পরেও আঙ্গুলের ছাপ দিতে মাসের পর মাস অপেক্ষা করা লাগতো। দ্রুত যেন ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়া হয় তার জন্য কেউ কেউ দালালও ধরত। এখন আগে ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট, পরে পরীক্ষা। এটা ভাল হলো।’

আল-আমিনের পাশেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন একটি পুঠিয়ার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক (৩৪)। তিনি বলেন, ‘আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে দিয়ে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হতো। লাইসেন্স প্রস্তুত হয়েছে কি না তা জানতে মাঝে মাঝে অফিসে এসে খোঁজ নিতে হতো। এখন থেকে অফিসেই আসা লাগবে না ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে। ড্রাইভিং লাইসেন্স বাড়ির ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এতে ভোগান্তি কমবে। সময় বাঁচবে।’

বিআরটিএর রাজশাহী সার্কেলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল খালেক জানালেন, এখন থেকে অনলাইনে আবেদন করলেই আবেদনকারীকে লার্নার লাইসেন্স দেওয়া হবে। তিনি সেটা অনলাইনেই পাবেন। সেখানে তার পরীক্ষার তারিখও জানিয়ে দেওয়া হবে। ওই দিন এসে তিনি প্রথমে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেবেন। পরে পরীক্ষায় অংশ নেবেন। যেদিন পরীক্ষা হবে, সেদিনই পাস করলে আবেদনকারীর মোবাইলে এসএমএস দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর তিনি অনলাইনে আবেদন ফি জমা দেবেন। এ জন্য অফিসেও আসতে হবে না। আবেদন ফি জমা দেওয়ার সময় গ্রাহকের কাছে জানতে চাওয়া হবে তিনি ডাকযোগে নাকি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে চান। তখন গ্রাহকের পছন্দমতো কুরিয়ার খরচ কিংবা ডাকমাশুলও নেওয়া হবে অনলাইনে। এরপর তিনি বাড়িতে বসেই লাইসেন্স পাবেন।

আব্দুল খালেক বলেন, এখন থেকে লাইসেন্স পাওয়ার জন্য শুধু একদিনই আবেদনকারীকে অফিসে আসতে হবে বায়োমেট্রিক এবং পরীক্ষা দিতে। তারপর আর আসার দরকার নেই। তার বাড়িতেই লাইসেন্স চলে যাবে। এ প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স প্রত্যাশীদের দুর্ভোগ ও হয়রানি অনেক কমে যাবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব জায়গায় এ পদ্ধতি চালু হবে বলেও জানান তিনি।

সর্বাধিক পঠিত

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com