সোমবার, মে ২০, ২০২৪

নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল

আর ও খবর

রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে অটিস্টিক শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে দুই অটিস্টিক শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এই শিশুকে আইন অনুযায়ি যে বিশেষ সুবিধা না দিয়ে তাদের পরিবার কে মানসিক চাপে রাখা হয়েছে। স্কুল থেকে বলা হয়েছে ‘পাগল ছেলেকে নিয়ে যান বিশেষ স্কুলে ভর্তি করেন’। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এদের আইনি অধিকারের বিষয়ে বলা হলে তিনি উল্টো জানতে চান সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেখানে ফেল করলে ফেল সেখানে তাদের কোন যুক্ততে উত্তির্ন দেখানো হবে? তিনি এ ক্ষেত্রে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের স্বাভাবিক সন্তানের উদাহরণ টানেন। যে শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। তাকে বিশেষ অনুরোধ করা সত্বেও উত্তির্ন করা হয় নি। পরে সে শিক্ষার্থী টিসি নিয়ে চলে যান।

অটিস্টিক শিক্ষার্থীর পিতা সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা তহসীনূর রহমান রেজা বলেন, গত জানুয়ারি মাসে তিনি এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি আবেদন দিতে যান। প্রধান শিক্ষক ড. নূরজাহান বেগম তা গ্রহণ করেন নি। পরে তিনি ডক যোগে সে াাবেদন পাঠান। তিনি জেলা প্রশাসক এবং জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি আবেদন জমা দেন। ০১ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে তার সন্তান এবং অপর একজনের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এ ব্যপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিসার কে দেয়া আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, তার সন্তান রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে ২০২২ সালে ৩য় শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ছিল। তার অটিজম রয়েছে এবং রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত কোটাতে সে ২০২২ সালে কলেজিয়েট স্কুলের ৩য় শ্রেনীতে ভর্তি হয়। সে নিয়মিত স্কুলে ক্লাশ করে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে। কিন্তু এ ধরণের শিশুর যে ধরণের পরিবেশ পাওয়া উচিৎ ছিল সে ধরণের পরিবেশসে পায় নি। এ কারনে সে ঠিকমত অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারেনি। তবে পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় বার্ষিক পরীক্ষায় সে অংশ গ্রহণ করে। সে সকল বিষয়ে কৃতকার্য হয়। তারপরও তাকে ৩য় শ্রেণী হতে ৪র্থ শ্রেণীতে উর্ত্তীর্ণ করা হয়নি। বিষয়টি তার সন্তানের উপর ব্যাপক মানসিক চাপ তৈরী করে। সে মানসিকভাবে বির্পযস্ত হয়ে পড়ে। সে যত খানি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছিল তাতে তারা আশাবাদী ছিলেন। তার হয়তো অনেকাংশে উন্নতি ঘটবে। কিন্তু তাকে ৩য় শ্রেণী হতে ৪র্থ শ্রেণীতে উর্ত্তীর্ণ না করাতে সে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে পড়ালেখায় মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষামন্ত্রনালয় এর স্মারক-৩৭.০০.০০০০.০৭২.৪৩.১৪.৪৯৫ তারিখঃ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ নং পরিপত্রে উল্লেখিত এ ধরণের শিশুকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কালে বাড়তি ৩০ মিনিট সময় প্রদান ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। আরো উল্লেখ্য যে, প্রতিবন্ধি ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষাআইন ২০১৩ এর ধারা ১৬ এর উপধারা ১(ড) অনুসারে শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রসহ প্রযোজ্য সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্বাচ্ছন্দের উপযোগী পরিবেশ ও ন্যায্য সুযোগ সুবিধাপ্রাপ্তির অধিকার রাখে। এছাড়াও বিষয়টিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্র কর্তৃক অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। সেহেতু সমাজের অটিজম ও এনডিডি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল স্রোতোধারায় অন্তর্ভুক্তকরণ এর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী তাসমীম রেজাকে বিশেষ বিবেচনায় ৩য় শ্রেণী হতে ৪র্থ শ্রেণীতে উর্ত্তীর্ণ করার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।

পরে বিষয়টি জাতীয় অটিজম ফাউন্ডেশনের নজরে আনা হয়।এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. নূরজাহান বেগম বলেন, তাদের উত্তির্ন করা যাবে কিনা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলা হয় সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নি। তিনি উত্তির্ন করা যায় কিনা এমন কাগজ পত্র দাখিল করতে বলেন। জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন বলেন, বিষয়টির একটা সমাধান হয়েছে। গত ০১ মার্চ থেকে দুই শিশুকে উত্তির্ন দেখিয়ে চতুর্থ শ্রেনীতে ক্লাস করতে দেয়া হচ্ছে।

সর্বাধিক পঠিত