স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী সিটি নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার। শুক্রবার সকালে তিনি রাজশাহীতে পৌঁছেই লিটনের সঙ্গে ভোটের মাঠে নেমে পড়েন।
রাজশাহী এসে তিনি জাতীয় চারনেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আর দুপুরে নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড় এলাকার গণপূর্ত বিভাগের মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দলীয় প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে লিফলেট বিতরণ করেন।
এদিকে কিছু সময় সিএন্ডবি মোড় লক্ষ্মীপুর কাজিহাটাসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ভোটারদের সঙ্গে কূশল বিনিময় ছাড়াও কথাবার্তা বলেন এবং লিটনকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে চলমান উন্নয়নকে বেগবান করার আহ্বান জানান। কবির বিন আনোয়ার বলেন, রাজশাহীতে দলীয় প্রার্থী লিটনের জয় সুনিশ্চিত। ফলে এখানে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রচার-প্রচারণায় আসার প্রয়োজন হয়নি। রাজশাহীতে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তাতে রাজশাহীর মানুষ আবারও লিটনকে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত করবেন। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
অন্যদিকে বিকেলে কবির বিন আনোয়ার নগরীর ঘোষপাড়া মোড়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য দেন। পথসভায় তিনি বলেন, আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে জঙ্গি নেতা বাংলা ভাইয়ের কথা। মনে আছে রাজশাহীজুড়ে জঙ্গিবাদ, লুণ্ঠন, অত্যাচারের নৃসংশ কথা। আর এর বিপরীতে আমাদের লিটন ভাই দেখিয়েছেন উন্নয়নের পথ। তাঁর পিতা শহীদ কামাারুজ্জামান উত্তরবঙ্গ তথা সারা বাংলাদেশের কৃতি সন্তান। তাঁর স্বপ্ন ছিল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন, ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ার। তারই সিপাহশালার সৈনিক আমাদের লিটন ভাই, শুধু রাজশাহী নয় সারাবিশে^ রাজশাহীর সম্মান পৌঁছে দিয়েছেন। তিনিই রাজশাহীবাসীর জন্য একজন পরীক্ষিত বন্ধু। রাজশাহী আজ উন্নয়নের আদর্শ মডেল।
তিনি আরও বলেন রাজশাহীবাসী আপনারা রাজশাহীবাসী সজাগ ও সতর্ক আছেন নিশ্চয়। দেশে নির্বাচন নিয়ে নানারকম ষড়যন্ত্র চলছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার বিরুদ্ধে বিএনপি, জামায়াত-শিবির-রাজাকাররা সব এক জায়গায় এসে দেশবিরোধী চক্রান্ত করছে। যখন তারা দেশ চালাতে ব্যর্থ হন, তখন তারা মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারা তাদের কিছু ডামি প্রার্থী দাঁড় করায়। ইসলামের নামে, ধর্মের নামে তারা এই দেশে দীর্ঘদিন ধরে অন্যায় রাজত্ব কায়েম করেছে আবারও করতে চায়। ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিপক্ষে লিটন ভাই প্রমাণ করেছেন, উন্নয়ন কোন রূপকথার গল্প নয়। সারাবিশে^ রাজশাহী আজ পরিচ্ছন্ন শহরের পরিচিতি পেয়েছে। এই উন্নয়নের ধারা রাখতে হলে আমাদের ভুল করলে চলবে না। বন্ধু-বান্ধব সবাইকে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। সকল ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়ে আবার নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করবেন। এই নৌকা হচ্ছে উন্নয়নের প্রতীক। স্বাধীনতার প্রতীক। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক।
পথসভায় মেয়রপ্রার্থী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গত ৫ বছরের মধ্যে মাত্র আড়াই বছর কাজ করতে পেরেছি। কারণ করোনার কারণে দেড় বছর সারাপৃথিবীর মতো বাংলাদেশ অচল হয়েছিল। রাজশাহীও অচল হয়েছিল। কোন কাজ করতে পারিনি। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দফায় দফায় খাদ্য বিতরণ, ওষুধ ও অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়ি বাড়ি পৌছে দিয়েছি। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নির্মাণ সামগ্রী ও ডলার দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আড়াই বছর তেমন উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে যে অল্প সময় কাজ করতে পেরেছি, তার উন্নয়ন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে কর্মের সংকট। তেমন শিল্পকারখানা নেই। সরকারি কারখানা বন্ধ হয়ে আছে। এবার কর্মসংস্থান দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিসিক শিল্পনরগরী-২ নির্মিত হয়েছে। সেখানে ২৮৭টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা করা যাবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর তেখে শিল্পপতিদের নিয়ে এসে শিল্পকারখানা করবো।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আহসানুল হক পিন্টু, আইন বিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ রাজশাহীতে ১৪ দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কবির বিন আনোয়ার আগামী ১৮ জুন পর্যন্ত রাজশাহীতে অবস্থান করবেন। এ সময়ে তিনি রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কয়েকটি নির্বাচনী বৈঠক করা ছাড়াও নৌকা পক্ষে বিভিন্ন পথসভা ও র্যালিতে অংশ নেবেন।